Friday, June 23, 2017

প্রতারণার নতুন স্টাইল: টেবিল ল্যাম্প থেকে সোলার আইপিএস

সম্প্রতি এক চমকপ্রদ স্টাইলে প্রতারণা শুরু হয়েছে। সাধারণ একটা টেবিল ল্যাম্পকে সোলার চার্জার হিসেবে দেখিয়ে মানুষের হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ ধরনেরই এক বাটপারের খপ্পরে পড়ে আমরা পাঁচজন ছয় হাজার টাকা গচ্চা দিয়েছি।
ঘটনাটি ঘটেছে আমাদের অফিসে। এক আগন্তুক এসে তার ঝোলা থেকে একটি পণ্য বের করে দেখিয়ে বলল, এটা হচ্ছে এমন এক নতুন Solar Product, যেটাকে দিনের আলোতে অফ করা অবস্থায় কাত করে পাঁচ ঘন্টা রেখে দিলে ওটা সূর্যের আলোতে চার্জ হবে। তারপর রাতের বেলা যখন বিদ্যুৎ থাকবে না, তখন ওটাকে ঘরের বৈদ্যুতিক সুইচবোর্ডের সাথে সংযুক্ত করলেই তার সাহায্যে ঘরের একটি লাইট ও একটি ফ্যান চালানো যাবে। তাও আবার একনাগাড়ে ৬ ঘন্টা চলবে, আর সাড়ে ৫ ঘন্টার কম চললে ফেরত দেয়া যাবে। পণ্যটির দাম ৩৬০০/- টাকা জানিয়ে আগন্তুক লোকটি এর বিক্রয় অপশন সম্পর্কে একের পর এক চমকপ্রদ অফার আমাদের সামনে পেশ করল। প্রথম অফারটি ছিল, প্রথমে দু'মাস ব্যবহার করে তারপর মূল্য পরিশোধ। দ্বিতীয় অফারটি ছিল, মাসিক ৩০০/- টাকা কিস্তিতে এক বছরে মূল্য পরিশোধ। তাও আবার এমন ভঙ্গিতে আমাদেরকে convince করল যে, শুধুমাত্র অফিসের লোকজনকেই কিস্তিতে ক্রয়ের সুযোগ প্রদান করা হয়ে থাকে। এরপর হাজির হল সর্বশেষ আকর্ষণীয় প্যাকেজ। ৩৬০০/- টাকার জিনিসটি এক লাফে ১৩০০/- টাকায় নেমে এল, যা পাইকারী দর এবং এর জন্য কমপক্ষে ৫টি ক্রয় করতে হয়। আমরা পাঁচজন মিলে ১৩০০/- টাকা দরে উক্ত জিনিসটি ক্রয় করলাম।
সর্বপ্রথম একজন ওটা দেখে সনাক্ত করে যে, ওটা স্রেফ একটা টেবিল ল্যাম্প মাত্র, যা কিনা মার্কেটে ৩০০/- টাকা দামে বিক্রি হয়। পরে এর প্যাকেটের লেখা সব পড়ে দেখলাম, solar শব্দটাও কোথাও নেই। এটির উপযোগিতা ও ব্যবহার বলতে যা লেখা আছে দেখলাম, এটি একটি লেন্সযুক্ত লাইট, যা আলো করার পাশাপাশি ছোট জিনিসকে বড় করে দেখতে সহায়ক।
যাহোক, এ থেকে ব্যবসায়িক প্রতারণার একটি বিষয় আরো ভালোভাবে জানা গেল যে, এক লাফে দাম পড়ে যাওয়া এবং অস্বাভাবিক ডিসকাউন্ট দিয়ে বেশি মাল চালানো প্রতারণারই আলামত। কোন কোন কোচিং সেন্টার ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (বিশেষত কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান)ও এমন রয়েছে, যারা অফার করে, মাসিক বেতন এত, আর ভর্তির শুরুতে অগ্রিম এক বছরের বা পুরো কোর্সের টাকা জমা দিলে এত।